আসল চন্দন চেনার উপায়

আসল চন্দন চেনার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন কিন্তু খুঁজে পাচ্ছেন না। চিন্তার কোন কারণ নেই, আমার এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি সকল তথ্য জানতে পারবেন।এখানে চন্দন পাউডার এর দাম কত সেই সম্পর্কে ও আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন আশা করি আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন ।
এখানে শুধুমাত্র আসল চন্দন চেনার উপায় সম্পর্কে বলা নেই এর পাশাপাশি চন্দন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়, লাল চন্দন মুখে দিলে কি হয়, চন্দনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

ভূমিকা

রূপচর্চায় চন্দনের ব্যবহার বহুকাল থেকে হয়ে আসছে। ত্বকের সুরক্ষা থেকে ত্বকের যত্ন সব কিছুই রূপচর্চার সঙ্গে জড়িত। একেক ঋতুতে একেকরকম ভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হয়। তবে শীতের সময় ত্বকের যত্ন একটি বেশি নিতে হয় এ সময় ত্বক অনেক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। প্রাচীনকাল থেকে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য চন্দনের ব্যবহার হয়ে আসছে।

মূলত চন্দন গাছের কাঠ কে শুকিয়ে গুড়া করে যে পাউডার পাওয়া যায় সেটাকেই আমরা চন্দন পাউডার বলে থাকি। রূপচর্চায় এই চন্দন পাউডারের বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে তবে কোনটা আসল চন্দনপাউডার আর কোনটা নকল সেটা জানা খুবই জরুরী।

চন্দন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

চন্দন আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। মুখে চন্দন ব্যবহার করলে ত্বকের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় যেমন: ব্রণ, বয়সের ছাপ, কালো দাগ ইত্যাদি আরও অনেক সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে চন্দন খুব কাজে লাগে। চন্দন দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে অনেকে জানতে চাই সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

চন্দন যে সবার উপকার করে এটাও কিন্তু নয় কারো কারো কাজে দেয় আবার কারো কারো ত্বকেরও ক্ষতি করে। প্রাকৃতিক চন্দন ব্যবহার করে আমরা ফর্সা ত্বক পেতে পারি। এজন্য ২ চা চামচ চন্দন পাউডার, ২ চা চামচ গরুর দুধ এবং তিন থেকে চার ফোঁটা লেবুর রস একটি পাত্রে নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে এরপর মিশ্রণটিকে সমস্ত মুখে অ্যাপ্লাই করতে হবে এরপর পেস্টটিকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভালোভাবে শুকিয়ে নিয়ে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।

এভাবে প্রতি সপ্তাহে মুখে তিন থেকে চারবার নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক আস্তে আস্তে ফর্সা হবে। তবে এটি ধৈর্য ধরে নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে তবে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। এছাড়াও আসল চন্দন চেনার উপায় সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে।

চন্দন কাঠের ব্যবহার

দেখতে সাধারণ কাঠের টুকরা হলেও চন্দনের অনেক বিস্ময়কর গুণ রয়েছে। আদিমকাল থেকে রূপচর্চায় চন্দনের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। চন্দন যেমন রূপচর্চায় কাজে লাগে তেমন এর অনেক ঔষধিগুন রয়েছে। এই গাছের ফুল কিংবা পাতায় কোন সুগন্ধ থাকে না কেবলমাত্র কাঠে সুগন্ধ থাকে। রূপচর্চার পাশাপাশি এই কাঠ ঔষধ শিল্প, সুবন্ধি দ্রব্য এবং অ্যারোমা থেরাপিতে ব্যবহৃত হয়।

চন্দন খুবই উপকারী যা ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে। চন্দন অসাধারণ আন্টি-ভাইরাস এজেন্ট রয়েছে যা ত্বকের সংক্রমণ ও চুলকানি ক্ষেত্রে দারুন কার্যকরী। তাই আমাদের আসল চন্দন চেনার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। এছাড়াও চন্দন হাঁপানি সমস্যা রোধ করে, রক্তক্ষরণ বন্ধ করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, মূত্রনালী সংক্রমণ দূর করে এবং ত্বকের সমস্যা নিরাময় কতিপয় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।


সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের নিত্যদিনের পূজার জন্য চন্দন কাঠের ব্যবহার করে থাকে। চন্দন কাঠকে ঘষে তারা চন্দনের পেস্ট তৈরি করে এবং সেটা দিয়ে তারা নিত্যদিনের পূজা করে থাকে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের যে কোন শুভ অনুষ্ঠানের শুভ কাজে বিবাহতে তাদের চন্দনের প্রয়োজন পড়ে।

আসল চন্দন চেনার উপায়

চন্দন সাধারণত দুই প্রকারের হয়ে থাকে। একটা হল শ্বেত চন্দন এবং অপরটি হল রক্ত চন্দন।সাধারণত রূপচর্চায় শ্বেত চন্দনের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। রক্ত চন্দন খুবই বিরল চন্দন যা সাধারণত বাংলাদেশে পাওয়া যায় না। রক্ত চন্দন সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র প্রতিবেশী দেশ ইন্ডিয়াতে। তাই রূপচর্চায় শ্বেত চন্দনের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। 

কিন্তু চন্দন আসল কিনা নকল তা চেনার অনেক উপায় রয়েছে। চন্দন কাঠ সরাসরি মুখে মাখা যায় না এজন্য বাজারে চন্দনের গুড়ার একটা প্যাক পাওয়া যায় এই প্যাকের সাথে লেবুর রস, দুধ মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করতে হয় চন্দন কাঠ সাধারণত ধূসর বর্ণের হয় এবং হালকা গোল্ডেন রঙের। রূপচর্চায় চন্দনের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। 

নিয়মিত চন্দন ব্যবহার করলে ত্বক নরম ও কোমল থাকে।সেই প্রাচীনকাল থেকে ত্বকের যত্নে চন্দন ব্যবহার হয়ে আসছে। চন্দনের সুন্দর একটা মিষ্টি সুগন্ধ রয়েছে। চন্দনের পাতা কিংবা ফুলে কোন গন্ধ নেই এর কাঠে আসল সুগন্ধ রয়েছে। চন্দন গাছ সব জায়গায় পাওয়া যায় না চন্দন গাছের দাম রয়েছে। হিন্দুরা সাধারণত তাদের নিত্যদিনের পূজার কাজের চন্দন ব্যবহার করে থাকে।

চন্দন পাউডার ব্যবহারের নিয়ম

আমরা মুখে সরাসরি চন্দন কাঠ ব্যবহার করি না। চন্দন কাঠকে রোদে শুকিয়ে যে পাউডার করা হয় সেটাই হলো চন্দন পাউডার। আর আমরা এই চন্দন পাউডারই ব্যবহার করে থাকি। চন্দন পাউডার ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে অনেক। চন্দন কাঠ হলো এক ধরনের সুগন্ধি কাঠ যার আদি নিবাস হলো আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে। এটি ত্বককে কোমল করে ত্বকের প্রদাহ দূর করে এবং বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে সংক্রমণ গড়ে তোলে। 

চন্দন পাউডার তৈরি করার জন্য প্রথমে চন্দনকে কড়া রোদে শুকিয়ে তারপর মিহি পাউডার তৈরি করা হয়। চন্দন পাউডার নির্ভর করে আমরা এই পাউডার তৈরি করার জন্য কোন চন্দন ব্যবহার করছি তার ওপর। শ্বেত চন্দন পাউডার সবচেয়ে সাধারণ ধরনের কিন্তু লাল চন্দন পাউডারও হয়ে থাকে। তবে লাল চন্দন খুব একটা পাওয়া যায় না।


লাল চন্দন খুবই বিরল প্রকৃতির একটি চন্দন। তবে লালচন্দনে তুলনায় শ্বেত চন্দন পাওয়া যায় তুলনামূলক।ফেস মাস্ক হিসেবে শ্বেত চন্দন ব্যবহার করা হয় ত্বককে এক্সফোলিয়েট করার জন্য এবং মশ্চারাইজার করার জন্য। চন্দন পাউডার বডি পাউডার হিসেবেও আমরা ব্যবহার করে থাকি। এটি আমাদের ঘাম থেকে সুরক্ষা দেয়। 

এছাড়াও চুলের সুরক্ষা চুলের জন্য আমরা চন্দনের তেল ব্যবহার করে থাকি। আমাদের মধ্যে অনেকে ধুপকাঠি পছন্দ করে থাকে চন্দনের ধুপকাঠি হয় এই চন্দনের ধুপকাঠিতে সুন্দর সুবাস চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। চন্দনের বাজার মূল্য এর গুণগত মান বিক্রেতার অবস্থান এবং পরিমাণের ওপর নির্ভর করে কম বেশি হয়ে থাকে চন্দন যত ভালো হবে তার দাম তত বেশি হবে। 

সব চন্দনই ভালো হয় না আসল চন্দন চেনার উপায় রয়েছে অনেক  সেগুলো সম্পর্কে উপরে আলোচনা করা হয়েছে। তাই চন্দন কিনার আগে অবশ্যই দেখে নেবেন সেটা আসল কিংবা নকল। চন্দন পাউডার ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা অনেক বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক কোমল ও মসৃণ থাকে।

চন্দন পাউডার এর দাম কত

প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চার আভিজাত্য হিসেবে চন্দনের ব্যাপক ব্যবহার হয়ে আসছে। চন্দন ব্যবহার করলে আমাদের ত্বক অনেক উজ্জ্বল ও কোমল হয়। আমাদের দেশের নারীরা তাদের ত্বক সুন্দর ও উজ্জ্বল করতে চন্দনের ব্যবহার করে থাকে। চন্দন সাধারণত কাঠ হিসেবে মুখে ব্যবহার করা যায় না এজন্য চন্দনকে রোদে শুকিয়ে গুড়া করে নেওয়া হয়। 

তারপরে একে বাজারজাত করে বিক্রি করা হয় চন্দন পাউডার হিসেবে। এই চন্দন পাউডার মেয়েরা তাদের রূপচর্চার কাজে ব্যবহার করে থাকে। বাংলাদেশের বাজারে চন্দন পাউডারের দাম মূলত পাউডারের গুণগত মান, বিক্রেতার অবস্থান এবং পরিমাণের ওপর নির্ভর করে কম বেশি হয়ে থাকে। সাধারণত লাল চন্দন পাউডার খুবই বিরল তাই সাদা চন্দনের তুলনায় লাল চন্দন পাউডারের দাম একটু বেশি হয়ে থাকে। নিচে চন্দন পাউডার এর দাম কত সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। 

৫০ গ্রাম সাদা চন্দন পাউডারের দাম ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। ১০০ গ্রাম সাদা চন্দন পাউডারের দাম ২০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা। ৫০ গ্রাম লাল চন্দন পাউডারের দাম ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। ১০০ গ্রাম লাল চন্দন পাউডারের দাম 500 টাকা থেকে ৮০০ টাকা। বাজারের অবস্থার উপর নির্ভর করে চন্দন পাউডার এর দাম কম বা বেশি হতে পারে তবে আপনি যদি সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে চন্দন পাউডার কিনতে চান সে ক্ষেত্রে বড় দোকানের চেয়ে আপনার আশেপাশের ছোট দোকানগুলো থেকে কিনতে পাবেন। 

বড় দোকানে তুলনায় আশেপাশের ছোট দোকানে এসবের দাম অনেকটা কম হয়ে থাকে। তাই চন্দন পাউডার কিনার সময় এর দ্রব্যমূল্য যেমন দেখবেন এর পাশাপাশি এটাও দেখবেন এই চন্দন পাউডারটি আসল কিনা নকল।

চন্দন ব্যবহারের উপকারিতা

চন্দন ব্যবহারের উপকারিতা  রয়েছে অনেক। এটি যে শুধুমাত্র আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি এর অনেক ঔষধি গুনও রয়েছে। অনেক জটিল রোগের ওষুধে চন্দন ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও চন্দন ব্যবহারের নানাবিদ উপকার রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। চন্দন বা স্যান্ডেলউড ত্বকের নানাবিধ সমস্যা নিরাময় করে।

এটি একটি অ্যান্টিভাইরাল এজেন্ট এটি ত্বকের প্রদাহ দূর করে বিভিন্ন ক্ষতস্থানকে সারিয়ে তোলে, শুষ্ক ত্বককে কোমল করে, তৈলাক্ত ত্বককে দূর করে, সূর্য বা সানবার্ণ কে দূর করে করে ত্বককে নমনীয় করে তোলে। চন্দন অয়েলে অ্যান্টিস্প্যাজম্যাটিক গুণ রয়েছে যা হাঁপানি প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে । চন্দন রক্তক্ষরণ বন্ধ রাখে বলে আফটার শেভে চন্দন ব্যবহার করা হয় এটি অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। 

চন্দন কাঠের সুগন্ধি রয়েছে এটি মানুষের মস্তিষ্ককে শান্ত রাখে এবং মানসিক চাপ, অবসাদ ও দুশ্চিন্তা থেকে মানুষকে মুক্তি প্রদান করে এবং একাধারে মানুষের স্মৃতিশক্তি বাড়ায় ও মনোযোগের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়া চন্দনে এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য আছে যার রেচনতন্ত্রের জ্বালা ভাবের উপশম করতে সহায়তা করে এতে সহজেই প্রেশাব বেরিয়ে যাবার পথ তৈরি করে। এছাড়া ক্ষতিকর টক্সিক সহজে বের করে দিয়ে মন্ত্রণালীর সংক্রমণ নিরাময় সাহায্য করে। তাই আমাদের আসল চন্দন চেনার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে।

লেখক এর মন্তব্য

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থেকে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি আসল চন্দন চেনার উপায় সম্পর্কে আপনি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।আরও তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। এরকম আরো পোস্ট পেতে অবশ্যই আপনার মতামত কমেন্ট বক্সে জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অভ্রটেকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url