রক্ত চন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায়

রক্ত চন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন কিন্তু খুঁজে পাচ্ছেন না। চিন্তার কোন কারণ নেই, আমার আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি সকল তথ্য জানতে পারবেন। এখানে রক্ত চন্দন গাছের উপকারিতা সম্পর্কে ও আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন আশা করি আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
এখানে শুধুমাত্র রক্ত চন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে লেখা নেই এর পাশাপাশি রক্ত চন্দন গাছ চেনার উপায়, রক্ত চন্দন গাছের দাম, রক্ত চন্দন গাছ কি কাজে লাগে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

ভূমিকা

পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ও মূল্যবান গাছ হল চন্দন কাঠের গাছ। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের নিত্যদিনের পূজার জন্য এই চন্দন কাঠ ঘষে চন্দন তৈরি করেন। পূজা হোক কিংবা যে কোন শুভ অনুষ্ঠান সব ক্ষেত্রে চন্দনের ব্যাপক ব্যাবহার রয়েছে এছাড়াও চন্দন কাঠের অনেক ঔষধি গুনাগুন রয়েছে। প্রতি একর জমিতে চন্দন চাষ করলে ৩২ থেকে ৩৩ কোটি টাকা উপার্জন করা সম্ভব তবে কেউ যদি শুধুমাত্র একটি গাছ লাগায় তাহলেও সে অনায়াসে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা উপার্জন করতে পারবে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রক্ত চন্দন গাছের উপকারিতা অপরিসীম।

রক্ত চন্দন গাছ চেনার উপায়

চন্দন গাছ তিন প্রকারের হয়ে থাকে। শ্বেত চন্দন, রক্ত চন্দন ও পিত চন্দন। এর মধ্যে পিত চন্দনের কথা শোনা গেলেও এর কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাই চন্দনের প্রকারভেদ হিসেবে সাধারণত শ্বেত চন্দন ও রক্ত বা লাল চন্দনকে ধরা হয়। চন্দন কাঠ অনেক দামি হওয়ায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রতিনিয়ত মানুষদের প্রতারিত করে আসছেন।

খালি চোখে চন্দন কাঠ চেনা খুব একটা সহজ নয়। সেটা পরীক্ষা করার জন্য প্রথমে একটা ব্লেট বা ছুরি দিয়ে গাছের কিছু অংশ কেটে নিতে হবে। কেননা রক্ত চন্দনের বাইরের দিক ধূসর বর্ণের হলেও ভেতরের দিক লাল বর্ণের। এই গাছ সাধারণত ১৫ থেকে ১৮ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। রক্ত চন্দন গাছের ছাল কালো আভাযুক্ত ধূসর বর্ণের এবং এর বাইরের অংশটা শক্ত কিন্তু ভেতরের দিক লাল বর্ণের।

এই লাল রঙটি দ্বারাই বুঝা যায় কোনটি শ্বেত চন্দন আর কোনটি রক্ত চন্দন। সকলেই জানে চন্দন কাঠে একটা মিষ্টি ঘ্রাণ থাকে কিন্তু রক্ত চন্দনে কোন প্রকার সুগন্ধ থাকে না। রক্ত চন্দন গাছ কিছুটা চাপা, এর বাইরের অংশ চামড়ার মত শক্ত হয়ে থাকে এবং উভয় দিক গোলাকার। রক্ত চন্দন একটি চিরসবুজ বৃক্ষ। এর পুষ্পদণ্ড লম্বা এবং চারদিকে ফুল হয় তবে গ্রীষ্মকালে ফুল ও ফল হয় না। রক্ত চন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায় এই সম্পর্কে অনেকেই সঠিক তথ্য জানতে চাই।

রক্ত চন্দন গাছের দাম

পৃথিবীর সবচেয়ে দামি একটি গাছ হল চন্দন গাছ। বাংলাদেশের রক্ত চন্দন গাছ তেমন একটা দেখতে পাওয়া যায় না। টাঙ্গাইল মধুপুর জাতীয় উদ্যানের কর্মকর্তা সেখানে একটি রক্তচন্দন গাছ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন। টাঙ্গাইল বন বিভাগের সহকারী বলেন, চন্দন গাছ অনেকদিন বাঁচে। যেহেতু বাংলাদেশে একটি মাত্র রক্ত চন্দন গাছের সন্ধান পাওয়া গেছে তাই গাছটির সঠিক বাণিজ্যিক মূল্য নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।

তবে ধারণা করা যায় এই রক্তচন্দন গাছের প্রতি কেজি কাঠের মূল্য ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। এই কাঠ অনেক মূল্যবান সব সময় সব জায়গায় এই কাঠ পাওয়া যায় না। আমাদের উচিত রক্ত চন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায় সেটা জেনে বেশি বেশি করে গাছ লাগানো এতে আমরা আর্থিকভাবে লাভোবান হতে পারব। চন্দন খুবই বিরল প্রকৃতির একটি গাছ। উপমহাদেশের আবহাওয়া রক্ত চন্দনের অনুকূল নয় তাই শ্বেত চন্দন লাগিয়ে সাফল্য পেলেও রক্ত চন্দন লাগিয়ে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সাফল্য পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞরা টিস্যু কালচার পদ্ধতি ব্যবহার করে এর উৎপাদন বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছেন।

রক্ত চন্দন গাছ কি কাজে লাগে

দেখতে সাধারণ কাঠের টুকরা হলেও রক্ত চন্দনের অনেক বিস্ময়কর গুণ রয়েছে। আদিমকাল থেকেই রূপচর্চায় চন্দনের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। চন্দন যেমন রূপচর্চায় কাজে লাগে তেমন এর অনেক ঔষধি গুনও রয়েছে। এই গাছের ফুল কিংবা পাতায় সুগন্ধ থাকে না কেবলমাত্র কাঠের গন্ধ রয়েছে। রূপচর্চার পাশাপাশি এই কাঠ ওষধ শিল্প, সুগন্ধি দ্রব্য এবং অ্যারোমা থেরাপিতে ব্যবহৃত হয়।

 রক্তচন্দন কাঠের বৈজ্ঞানিক নাম হল টেরোকার্পাস সান্টালিনাশ এল। একটি রক্ত চন্দন কাঠ রুবি কাঠ, লাল চন্দন, হার্ট উড প্রভৃতি নামে পরিচিত। রক্ত চন্দনে অনেক ফাইটো কেমিক্যাল রয়েছে যেমন পলিফেনলিক যৌগ, গ্লাইকোসাইডস এবং ফেনলিক এসিড। রক্ত চন্দন খুবই উপকারী কাঠ যা ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে আমাদের রক্ষা করে।

স্যান্ডেলউড অসাধারণ আন্টি ভাইরাল এজেন্ট যা ত্বকের সংক্রমণ ও চুলকানির ক্ষেত্রে দারুন কার্যকরী। এছাড়া রক্ত চন্দন হাঁপানি সমস্যা রোধ করে, রক্তক্ষরণ বন্ধ রাখে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, মূত্রনালী সংক্রমণ দূর করে এবংত্বকের সমস্যা নিরাময়ে কতিপয় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে

রক্ত চন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায়

রক্ত চন্দন গাছ খুবই বিরল প্রকৃতির একটি গাছ। বাংলাদেশের রক্ত চন্দন গাছের চারা পাওয়া যায় না বললেই চলে। বাংলাদেশের রক্তচন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায় এই নিয়ে মানুষের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। চন্দন গাছ সাধারণত দুই প্রকার। একটা হল শ্বেত চন্দন এবং অপরটি হলো রক্ত চন্দন। শ্বেত চন্দন গাছের বাগান বাংলাদেশের প্রথম গড়ে তোলা হয় চট্টগ্রামে।

রক্ত চন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। পৃথিবীর সব থেকে দামি চন্দন গাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে পুরো বিশ্ব জুড়ে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের নিত্যদিনের পূজোর কাজের চন্দন ব্যবহার করে থাকে। চন্দন গাছে আমাদের ত্বকের জন্য বেশ কিছু পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে এর পাশাপাশি এর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে।


রক্ত চন্দন গাছ আমাদের দেশে পাওয়া যায় না বললেই চলে তবে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রে অর্থাৎ ভারতে সবথেকে বেশি চন্দন গাছ পাওয়া যায়। এছাড়াও পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যেমন: ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া সহ আরো অনেক দেশে এই দামী চন্দন গাছ দেখতে পাওয়া যায়।এই রক্ত চন্দন গাছের চারা রোপনের উপযুক্ত সময় হল জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত। এ সময় রোপন করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায় এবং ফলনের বৃদ্ধি ঘটে। তাই ভালো ফলাফল পেতে সঠিক সময়ে রক্ত চন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায় সেটা জেনে রোপন করতে হবে।

রক্ত চন্দন গাছের ছবি

চন্দন আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। এটি একটি অনেক দামী গাছ। এর মধ্যে রক্ত চন্দন গাছ খুবই বিরল প্রকৃতির একটি গাছ। এটি বাংলাদেশে  পাওয়া যায় না বললেই চলে। অনেতে রক্ত চন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায় সেটাও জানেরা। আবার অনেকে রক্তচন্দন গাছও চেনে না তাই আমরা রক্ত চন্দন গাছের ছবি দিয়ে দিলাম যাতে আপনি সহজে এটিকে শনাক্ত করতে পারেন।

                                          ছবি নং:১


                                              ছবি নং:২


                                              ছবি নং:৩


রক্ত চন্দন গাছের উপকারিতা

চন্দন ব্যবহারের অনেক উপকার রয়েছে। এটি যে শুধুমাত্র আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি এর অনেক ঔষধি গুনও রয়েছে। অনেক জটিল রোগের ঔষধে চন্দন ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও চন্দন ব্যবহারের নানাবিদ উপকার রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

চন্দন বা স্যান্ডেল ও ত্বকের নানাবিধ সমস্যা নিরাময় করে এটি একটি অ্যান্টিভাইরাল এজেন্ট এটি ত্বকের প্রদাহ দূর করে, বিভিন্ন ক্ষতস্থানকে সারিয়ে তোলে, শুষ্ক ত্বককে কোমল করে, তৈলাক্ত ত্বককে দূর করে সূর্য বা সান বার্ন কে দূর করে ত্বককে নমনীয় করে তোলে। চন্দন অয়েলে এন্টি স্প্যাজম্যাটিক গুণ রয়েছে যা হাঁপানি প্রতিরোধে সহায়তা করে।


চন্দন রক্তক্ষরণ বন্ধ রাখে বলে আফটার শেবের চন্দন ব্যবহার করা হয়। এটি অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে কাজ করে। চন্দন কাঠের সুগন্ধি রয়েছে। এটি মানুষের মস্তিষ্ককে শান্ত রাখে এবং মানসিক অবসাদ ও দুশ্চিন্তা থেকে মানুষকে মুক্তি প্রদান করে এবং একাধারে মানুষের স্মৃতিশক্তি বাড়ায় ও মানব মানুষের মনোযোগের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

এছাড়া চন্দনে এন্টিফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য আছে যা রেচনতন্ত্রের উপশম করতে সহায়তা করে। এতে সহজে প্রেশাব বেরিয়ে যাবার পথ তৈরি হয়। এছাড়া ক্ষতিকর টক্সিক সহজে বের করে দিয়ে মূত্রনালীর সংক্রমণ নিরাময়ে সাহায্য করে। 

লেখকের মন্তব্য

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থেকে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি রক্ত চন্দন গাছের চারা কোথায় পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। আরও তথ্য পেতে আমার ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করুন। এরকম আরো পোস্ট পেতে অবশ্যই আপনার মতামত কমেন্ট বক্সে জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অভ্রটেকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url