বেসন দিয়ে মুখ পরিষ্কার হওয়ার উপায়

বেসন দিয়ে মুখ পরিষ্কার হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন কিন্তু কোথাও আপনার মনের মতো তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না । চিন্তার কোন কারণ নেই আমার এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনি সকল তথ্য জানতে পারবেন। এখানে বেসন ও লেবুর ফেসপ্যাক সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন আশা করি আপনার সমাধান পেয়ে যাবেন।
এখানে শুধুমাএ বেসন ‍দিয়ে মুখ পরিষ্কার হওয়ার উপায় সম্পর্কেই বলা নেই এর পাশাপাশি প্রতিদিন মুখে বেসন ব্যবহার করা যাবে কিনা ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

ভূমিকা

প্রাচীনকাল থেকেই ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য বেসন ব্যবহার করা হয়। ত্বককে কোমল করতে ও ত্বকের মসৃণতা বৃদ্ধি করতে বেসন কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বেসনের সঙ্গে কিছু উপাদান মিশিয়ে স্ক্রাব হিসাবে শরীরে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। বেসন যে শুধু ভাজা- পোড়া বানানোর কাজেই ব্যবহার করা হয় তা নয় কিন্তু, রূপচর্চায় এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায়ও বেসন ব্যবহার করা হয়।
বেসন ত্বকের মৃত কোষগুলোকে দূর করে ত্বকে উজ্জ্বলতা ফুটিয়ে তোলে। বর্তমানে বাজারে বেসনের নানা রকম ফেসপ্যাক পাওয়া যায়। বেসন ব্যবহারের ফলে ত্বক ফর্সা ও টানটান হয় এবং ত্বকে অবাঞ্চিত লোম দূর হয় । নিয়মিত বেসন মাখলে আমাদের ত্বক ভালো থাকে। ত্বক মসৃণ থাকে।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেসনের ব্যবহার

তৈলাক্ত ত্বককে মসৃণ করতে বেসন কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। মানুষের ত্বক সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে তৈলাক্ত এবং শুষ্ক। তৈলাক্ত ত্বক আমাদের কারোই পছন্দ না। মসৃণ কোমল ও শুষ্ক ত্বক পাওয়ার জন্য বেসনের ফেসপ্যাক এর ব্যবহার কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বেসনের এই ফেসপ্যাক ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। একটা বাটিতে ২ চা চামচ বেসন,২-৩ ফোটা লেবুর রস, ১/২ চামচ মধু ও দুধ দিয়ে এই ফেসপ্যাক তৈরি করা হয়। এই ফেসপ্যাক সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করা যায়।

বেসন ও হলুদের ফেসপ্যাক

সৌন্দর্যের অপার রাজত্বের নাম হলো হলুদ। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে হলুদ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তেমনি বেসন ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে মসৃণ করে। এই দুই এর সমন্বয়ে তৈরি হয় এক কার্যকরী ফেসপ্যাক। এই ফেসপ্যাক বানানোর জন্য ২ চামচ বেসন, ১/২ চামচ হলুদ, ১/২ চামচ লেবুর রস এবং অল্প পরিমাণ গোলাপ জল মিশিয়ে নিতে হবে।
এরপর এই ফেসপ্যাক ত্বকের উপর লাগাতে হবে এবং পুরোপুরি শুকানো না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এই ফেসপ্যাক ত্বকের উপর প্রাকৃতিক এক্সফলিয়েটর হিসেবে কাজ করে এবং ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে।

বেসন ও লেবুর ফেসপ্যাক

লেবু ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। লেবুতে অ্যাসকরবিক এসিড থাকে যা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। লেবুর রস মিশ্রিত ফেসপ্যাক ত্বকে ব্যবহারের পর কারো কারো ত্বকে জ্বালাপোড়া হতে দেখা যায়, তবে এটি সবার হয় না যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা ও প্রদাহ রয়েছে তাদের এটি হয়ে থাকে।
তাই যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা আছে বা শরীরের কোন অংশ অর্থাৎ যেখানে আপনি লেবুর ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করবেন সেই অংশ যদি কেটে থাকে তাহলে সেখানে লেবুর ফেসপ্যাক ব্যবহার না করাই শ্রেয়। কারণ কেটে যাওয়া অংশে এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে আপনার জ্বালাপোড়া ও প্রদাহ অনুভূত হবে। বেসন ও লেবুর ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য একটি বাটিতে এক টেবিল চামচ লেবুর রস, এক টেবিল চামচ বেসন, এক চা চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
এরপর মিশ্রণটিকে ভালোভাবে নেড়ে সমান ভাবে পুরো মুখে লাগিয়ে শুকাতে দিতে হবে। ফেসপ্যাক ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এই ফেসপ্যাক মুখের ট্যান কমাতে সাহায্য করে। সূর্যের আলোতে গেলে আমাদের মুখে ট্যান ভাব চলে আসে এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে আমাদের মুখে সেই ট্যান ভাব আর থাকবে না ত্বক হবে কোমল ও মসৃণ।

বেসন ও মধুর ফেস প্যাক

মধু হলো মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ যা মৌমাছি ফুলের নির্যাস হতে সংগ্রহ করে। এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। এটি ব্যবহারে কোন রকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় না। মধুতে এন্টি অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ক্ষমতা থাকার কারণে এটি শরীরকে সুস্থ রাখে। বেসনের মতো মধুও ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে।
মধু এবং বেসনের ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য ১ চা চামচ বেসনের সঙ্গে কিছুটা হলুদ গুড়ো এবং ১ চামচ টমেটোর রস মিশিয়ে পেস্ট করে নিতে হবে। এরপর উক্ত মিশ্রণের সাথে ১ চা চামচ মধু এবং ১/২ চামচ টক দই ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে এতে ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকবে। ২০-২৫ মিনিট মুখে মাখিয়ে রাখতে হবে।
এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। সপ্তাহে ২-৩ বার এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রতিনিয়ত ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য নিয়মিত এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করতে হবে এবং ত্বকের যত্ন নিতে হবে সঠিক নিয়মে সঠিক উপায় সবকিছু ব্যবহার করলে অবশ্যই ভালো ফলাফল পাওয়া সম্ভব।

বেসন দিয়ে মুখ পরিষ্কার হওয়ার উপায়

বেসন আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী উপাদান। প্রতিদিনের কাজের জন্য আমাদেরকে বাইরে বেরোতে হয়। বাইরে বেরোনোর ফলে সূর্যের আলোর তাপে আমাদের ত্বক অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া আমাদের ত্বকের লোমকূপে নানা ময়লা জমা হয় যা হয়তো আমরা খালি চোখে বুঝতে পারি না যার কারণে আমাদের ত্বক কালো হয় এবং বিভিন্ন ছোপছোপ দাগের সৃষ্টি হয়।
এমন অবস্থায় ত্বকের যত্ন নিতে বেসনের ব্যবহার অপরিহার্য। বেসন একটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসাবে কাজ করে। ত্বকের সুস্থতা এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে বেসনের কোন তুলনা নেই। সপ্তাহে অন্তত ২-৩ বার বেসনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করা উচিত। বেসনে ফেসপ্যাক একটি অত্যন্ত কার্যকরী ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। এটি আমাদের ত্বকের ময়লা ভাব দূর করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে।

প্রতিদিন মুখে বেসন ব্যবহার করা যাবে কি

বেসন একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান। এটি শুধু রান্নার কাজেই ব্যবহার করা হয় না রূপচর্চায়ও এর নানাবিধ ব্যবহার রয়েছে। বেসন দিয়ে যেমন আমরা ভাজা-পোড়া বানিয়ে থাকি তেমনি এটি দিয়ে আমরা আমাদের ত্বকের যত্নও নিয়ে থাকি।অনেকের প্রশ্ন আমরা কি প্রতিদিন মুখে বেসন ব্যবহার করতে পারব? তাহলে তাদের জন্য উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ, আপনি প্রতিদিন বেসন ব্যবহার করতে পারবেন।
তবে বেসন বেশিক্ষণ মুখে লাগিয়ে রাখা ঠিক হবে না ৫-৭ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। সবথেকে বেশি ভালো হবে যদি গোসলের আগে প্রতিদিন এটি ব্যবহার করে গোসল করেন।

লেখকের মন্তব্য

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থেকে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।আশা করি বেসন দিয়ে মুখ পরিষ্কার হওয়ার উপায় সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। আরও তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অভ্রটেকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url