গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়া ঠিক না ভুল? গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা, কয়টি করে খেজুর খাবেন, কি ধরণের খেজুর খাবেন সবকিছু বিস্তারিত আলোচনা করা হলো ।
গর্ভাবস্থায় প্রত্যেক নারীর ধীরস্থির ও সচেতন হয়ে চলা জরুরি ।তাই কোন ধরণের খাবার খাবেন যে খাবারটা খাচ্ছেন তার পুষ্টিগুণ উপকারিতা অপকারিতা কী পরিমাণ খেতে পারবেন সবকিছু জেনে রাখা ভালো । খেজুর হচ্ছে অনেক উপকারি একটা ফল । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি প্রত্যহ সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে সেদিন তাকে কোন বিষ বা জাদু ক্ষতি করতে পারবেন ” ।
ঠিক তেমনই যেকোন গর্ভবতীর জন্য খেজুর খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক বেশি ।সাধারণত বলা চলে বছরে যতগুলো দিন আছে তারথেকেও বেশি রয়েছে খেজুরের পুষ্টিগুণ । প্রতি ১০০ গ্রাম তাজা ও পরিষ্কার খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা থেকে ২৩০ ক্যালরি শক্তি উৎপাদন করে, ৭৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ২.৫ গ্রাম প্রোটিন এবং ০.৪ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে । তাছাড়া খেজুরে প্রায় ৮০ শতাংশ প্রাকৃতিক মিষ্টতা রয়েছে য়া গর্ভের সন্তানের বিকাশের জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করে । সবচেয়ে বেশি যা আছে তা হলো ফলিক এসিড । প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে ১৯ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড রয়েছে যা প্রতিদিনের চাহিদার ৪.৭৫ শতাংশ পূরণ করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড গর্ভের সন্তানের জন্মগত ক্রটিসহ নানা ধরণের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ।গর্ভাবস্থায় পায়ে টান লাগা খিচুনি এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগে থাকেন গর্ভবতী মা।
এইসব হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে পটাশিয়ামের ঘাটতি । একজন গর্ভবতীকে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ৪৭০০ মি.গ্রা. পটাশিয়াম গ্রহণ করতে পরামর্শ দেওয়া হয় ্। প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে ৬৫৬ মি.গ্রা. পটাশিয়াম রয়েছে । তাই গর্ভাবস্থায় খাদ্য তালিকায় খেজুর রাখতে পারেন । গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন খেজুর খেলে প্রায় ৩৯ মি.গ্রা. ক্যালশিয়ামের চাহিদা পূরণ হয় যা দৈনিক চাহিদার ৩.৯ শতাংশ ।
ক্যালশিয়াম গর্ভের বাচ্চার গঠনের জন্য বেশ উপকারি ।খেজুর খাওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে খেজুর মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত রাখে যা গর্ভাবস্থায় আপনার ক্লান্ত শরীরে শক্তি যোগাতে সক্ষম । গর্ভাবস্থায় প্রায়ই শরীর দুর্বল হয়ে যায় বা পানি শূণ্যতা দেখা দেয় । খেজুর গ্লকোজের অভাব দূর করে এমনকি কোষ্ঠ্যকাঠিন্য রোধেও খেজুর বেশ ভূমিকা পালন করে । তাছাড়া বদহজম দূর করে দূর্বলতা রোধেও বেশ কার্যকরী । গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার সবচেয়ে বেশি বা গুরুত্বপূর্ন উপকারিতা হচ্ছে নিয়মিত খেজুর খেলে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৮০ শতাংশ বেড়ে যায় । এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে গর্ভাবস্থায় কখন থেকে খেজুর খাওয়া উচিত । আপনি চাইলে গর্ভাবস্থার শুরু থেকে খেজুর খেতে পারেন তবে নরমাল ডেলিভারি করাতে চাইলে সাত থেকে আট মাস সময় থেকেই নিয়মিত খেজুর খেতে হবে । যখন গর্ভাবস্থার সাত থেকে আট মাস রানিং তখন আপনার শারীরিক অবস্থা অনেক দূর্বল থাকে মায়ের শক্তির প্রয়োজন হয় । ডেলিভারির জন্য অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে খেজুর বেশ কার্যকর এমনকি ডেলিভারির পরও মায়ের বুকের দুধ বূদ্ধিতে অনেক বেশি সহায়ক এই খেজুর ।
এক গবেষণায় দেখা গেছে কালো খেজুরের থেকেও লাল রঙের খেজুরের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি যা গর্ভাবস্থায় আপনার পুষ্টি চাহিদা পূরণ করবে । তাই গর্ভাবস্থায় লাল খেজুর খাওয়ার চেষ্টা করবেন । সকলেরই জানা যেকোন খাবার অতিরিক্ত খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে আর গর্ভাবস্থায় তো এই ঝুকি আরও বেড়ে যায় । তবে গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওযার উপকারিতা থাকলেও প্রতিদিন সর্বনিম্ন দুই থেকে তিনটা খেজুর খাওয়াই যথেষ্ট এরথেকে বেশি সেবন করলে আপনার ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যেতে পারে , এমনকি গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এর সম্ভাবনা বেড়ে যায় । তাছাড়া রক্তে শর্করার মাএা বৃদ্ধি পেতে পারে,অনেক বেশি গরম লাগতে পারে এমনকি দাঁতের বিভিন্ন ধরণের সমস্যা বা ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায় ।
খেজুর মায়ের শরীর থেকে শিশুর শরীরে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ করে ।এমনকি বাচ্চার বৃদ্ধিতে অনেক বেশি ভূমিকা রাখে । উচ্চ রক্তচাপ , হৃৎপিন্ড এমনকি কিডনি ভালো রাখতে সহায়তা করে । তাই গর্ভাবস্তায় নিয়মিত খেজুর খাওয়ার চেষ্ট করবেন । নরমাল ডেলিভারি চাইলেতো খেজুর খেতে হবে।
Thank you so much for your sharing health tips regarding Ramadan.